-->

অনিল ঘড়াই-ড. চঞ্চলকুমার মণ্ডল

 
অনিল ঘড়াই-ড. চঞ্চলকুমার মণ্ডল

 অনিল ঘড়াই


‘নুনবাড়ি’ আর ‘বনবাসী’র প্রান্ত জীবন কথা; --
‘গোলাপী জীবন’ যার নাম, সেই তো ‘তরঙ্গ লতা’!
‘কাননে কুসুম কলি’ই ‘পাতাওড়ার দিন’, -
গ্রাম-বাংলার মাটি-শেকড়, ভূত-প্রেত আর জিন।
সব কিছু তাঁর কথাকলায় পায় শিল্পের প্রাণ,
দৌড়বোনালার স্বর্ণপিয়ায় জীবনের আঘ্রাণ!
নতুন-নতুন ভূগোল পথে জীবন খোঁজার লড়াই,
‘খেলাঘরে’র জীবন আঁকেন শিল্পী অনিল ঘড়াই!
‘কালের পুতুল’ জীবনগুলোর ‘প্লাবন’ ভাঙে ‘বাঁধ’,
‘সামনে সাগর’ তবুও চলায় ‘বক্ররেখা’র ফাঁদ!
দগ্ধ দিনের ‘চৈত্রফুল’ আর ‘নীল দুঃখের ছবি’, -
সবখানেতেই স্বপ্ন দেখেন প্রান্তকুলের রবি!
‘অনন্দ দ্রাঘিমা’ পথে ব্রাত্যজদের লড়াই, -
‘বিপরীত যুদ্ধের মহড়া’ আঁকেন প্রিয় অনিল ঘড়াই!
‘মেঘ জীবনের তৃষ্ণা’ নিয়ে লড়াই জীবন-মরণ,
প্রান্তজদের পিয়াস মেটান নদী ‘পিয়াস হরণ’!
‘উৎস ভূমির গান’ শুনি ঐ ‘ঝড়-বৃষ্টির পরে’ –
‘বোবাযুদ্ধে’র জীবন মাঝে ‘মুকুলের গন্ধ’ ঝরে!!
  

     ‘কাক’, ‘পরীযান’, ‘লু’ – আর ‘জ্ঞানবৃক্ষের ফল’,
    কতশত গল্প এমন চোখে আনে জল!
    ‘কামকুঠিয়া’ মানুষগুলোর ‘স্বপ্নের খরা পাখি’ –
    গল্পে-কথায় ‘আগুন’ হয়ে, মেলে রক্ত আঁখি!
    ‘আকাশ-মাটির খেলা’য় ঘটে জীবনের অভ্যুদয়, -
    কু-সংস্কার ফেড়ে ওঠে – ‘লোধাগ্রামের সূর্যোদয়’!! 


শোষিত জীবনকথায় বঞ্চনা আর হা-ভাতে
সুপ্তপ্রায় মানবিকতার চেতনাকে জাগাতে;
হিতপ্রায় কর্মে তিনি, শোষক শ্রেণীর বড়াই, -
চিরতরে ভেঙে ফেলার স্বপ্নে করেন লড়াই!
সেই স্বপ্নের গল্প-গাঁথেন হাতে নিয়ে ‘তূর্য’,
‘পরীক্ষিতে’র ছদ্মনামে, প্রতিবাদী এক সূর্য!
যেই সূর্যের আলো দেয় বেঁচে থাকার লড়াই,
প্রান্তকুলের রবি তিনি নামটি অনিল ঘড়াই!!
    

   আজ তিনি নেই মিথ্যা এ-যে, আছেন সবার মনে;
    মৃত্যু নদী পেরিয়ে আছেন মনের সঙ্গোপনে!
    মানুষের হাতে মানুষ তবু লাঞ্ছিত  যেথা হবে,
    অনিল, অনিলের স্বর লিপি সেথা-প্রতিবাদে কথা কবে!
    প্রান্তজদের দুঃখের ‘ওম’ বুকের মাঝে জড়াই, -
    নরদেবতায় নতজানু হতে শেখান অনিল ঘড়াই!!

 

কবিতাটি 'দুষ্টু' পত্রিকা কবিতা সংকল ২০১৬ তে প্রকাশিত হয়। যেখানে আধুনিক কথাসাহিত্যিক অনিল ঘড়াই-এর প্রায় সমস্ত সৃষ্টি সম্ভারকেই তুলে ধরা হয়েছে।